চক্ষুষ্মতী গান্ধারী
চক্ষুষ্মতী গান্ধারী
Tk. 510Tk.600You Save TK. 90 (15%)
Reward points :10
Condition :New
Availability : In Stock( Only 1 copies Left )
Cover : Hardcover
Habib Store
Latest Products
Categories
Details
আমার এখন পঞ্চদশ বৎসর বয়স। এতদিনে আমার বিবাহ হয়ে যাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু বিয়ে দিলে তো আমায় পতিগৃহে অচিরে পাঠাতে হবে। সেই কন্যাবিচ্ছেদ তিনি এবং মাতা কীভাবে সহ্য করবেন? সে কারণেই, পিতা আমার বিয়ের ব্যাপারে বিলম্ব করছিলেন। ক্ষুদ্র গান্ধার রাজ্যের রাজা হলেও তিনি রাজা। সুতরাং তেজে, বীর্যে যতই অকিঞ্চিৎকর হোন না কেন, তাঁর বিদুষী, বুদ্ধিমতী কন্যার বিবাহ কোনো প্রখ্যাত কুলসম্পন্ন রাজকুলে হোক, এমন আকাঙ্ক্ষা গান্ধারাধিপতির ছিল। উপযুক্ত শিক্ষার ব্যবস্থা করে বাল্য থেকে আমাকে তিনি সমস্ত বিষয়ে পারদর্শী করে তোলার প্রযত্ন করেছিলেন। ঠিক এরকম একটা সময়ে হস্তিনাপুরের অন্ধ রাজপুত্রের পাত্রীরূপে ভীষ্ম ভাটদের মাধ্যমে আমাকে সেখানে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব পিতাকে জানালেন। পিতা ক্ষুব্ধ চিত্তে যথোপযুক্ত সম্মান সহকারে বলেছিলেন, “কিন্তু আর্য, পাত্র যে অন্ধ !” ভীষ্ম বলেছিলেন, “রাজাদের দেখার জন্য কর্ণের প্রয়োজন হয় না। রাজা কর্ণেন পশ্যাতি। মহারাজ সুবল জানবেন আমি হস্তিনাপুর থেকে গান্ধারীকে নিয়ে যেতেই এসেছি। অতএব পাত্রের অন্ধত্বের কারণে তাকে প্রত্যাখ্যান করার স্পর্ধা না দেখালেই ভালো করবেন। কুলের বিষয়টা অবশ্য ভাববেন, এটা কুরুকুল। পাত্র ধৃতরাষ্ট্র যদিও অন্ধ এবং সে কারণে সিংহাসনের অধিকারী নন, কিন্তু কার্যত মান্যতায়, ধনে, মানে শিক্ষায় এবং দৈহিক শক্তি তথা সুপুরুষত্বে তিনি অনবদ্য। আপনি সত্ত্বর কন্যাকে সজ্জিত করে দিন। যদি কনাপণ আপনাদের কুলরীতি হয়, তার জন্যও আমি প্রস্তুত। অন্ধ হলেও তিনিই প্রকৃত রাজা।” ভীষ্ম আমার পিতার বক্তব্যকে কিছুমাত্র মর্যাদা দেবার যোগ্য মনে করলেন না। তিনি তখন কুরুকুলের অভিভাবক এবং প্রচণ্ড প্রতাপশালী। তাঁর সামান্য ইশারায় তাঁর সৈন্যেরা গান্ধার নগরীকে বক্ষুর জলে নিক্ষেপ করতে সক্ষম। একথা পিতা জানতেন। তথাপি তিনি শিষ্টাচার বজায় রেখেই গাঙ্গেয়কে বিভিন্ন যুক্তি সহকারে বললেন, “আমি পিতাকল্পে অতিভাষণ করছি না। তবে আপনি নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে, আমিও সামান্য কুলগৌরবের অধিকারী নই এবং আমার কন্যা প্রকৃতই অতুলনীয় রূপ এবং গুণের অধিকারীণী। ভীষ্ম বললেন, “তা জানি বলেই গান্ধারীকে আমাদের কুলের জ্যেষ্ঠাবধূরূপে গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” পিতা বুঝলেন, ক্ষাত্র-রীতি ভীষ্ম নিজ শক্তিমত্তার জেরে লঙ্ঘন করছেন। এ স্থলে পিতার সম্মুখে দুটি উপায় আছে, হয় অস্ত্রধারণ অথবা ভীষ্মের কাছে নতজানু হয়ে আমাকে তাঁর হাতে তুলে দেওয়া। পিতা দ্বিতীয় পথটিই গ্রহণ করলেন বা করতে বাধ্য হলেন। কেননা তিনি বুঝলেন, ভীষ্মকে বাধা দিলে অনিবার্যভাবে গান্ধার রাজ্যের অস্তিত্বই সংকটাপন্ন হবে এবং প্রভূত লোকক্ষয় হবে। পিতা স্বভাবগত ভাবেই শান্ত ও নির্বিরোধ প্রকৃতির ছিলেন। ভীষ্মের প্রায়-স্বেচ্ছাচারী বিবাহ-সম্বন্ধ উপস্থাপনায় প্রায় কোণঠাসা হয়ে ভ্রাতারা সবাই বিক্ষুব্ধ হয়ে কৌরবদের প্রতি প্রতিশোধপরায়ণ হলেন। ক্ষেমংকরী ধাইমা এসে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে আমাকে বলল, “মন্দভাগ্যা কন্যা। এর ফল ভবিষ্যতে ভালো হবে না। ক্ষত্রিয়দের নানাবিধ বিবাহপ্রথার পিছনে প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে রাজন্যদের রাজনীতি এবং কূটনৈতিক স্বার্থের খেলা। সেক্ষেত্রে নারীর ইচ্ছে-অনিচ্ছের আদৌ কোনো ভূমিকা নেই। এমনকি স্বয়ম্বর বিবাহের আয়োজন বা গন্ধর্ব বিবাহের ক্ষেত্রেও রাজনৈতিক স্বার্থের ভূমিকা থাকেই। বাস্তবে তার উদ্দেশ্য থাকে, রাজনৈতিক সম্পর্কের বিস্তার অথবা পুত্রার্থে ক্রীয়তে ভার্যা। রাজাদের ক্ষেত্রে রানি একটা শোভামাত্র। প্রেম, ভালোবাসা বা নিছক যৌনতার জন্য রানির প্রয়োজন নেই। কিন্তু বংশধরের জন্য রানির প্রয়োজন আছে।”
Title :চক্ষুষ্মতী গান্ধারী
Author :মিহির সেনগুপ্ত
Publisher :Suprokash || সুপ্রকাশ
Language : Bangla
hardcover : 185 pages
Condition : New
Book Printed Origin : India
Readling Level : Teen and Young adult