
আগন্তুক || ময়ূখ চৌধুরী
আগন্তুক || ময়ূখ চৌধুরী
Tk. 350Tk.400You Save TK. 50 (13%)
Reward points :10
Condition :New
Availability : In Stock
Cover : Paperback
Comics World
Latest Products
Details
সায়েন্স ফিকশনের গল্পে এইচ. জি. ওয়েলস ও জুল ভার্নের গল্পের অনুবাদ পড়েই বাঙালির এই রসের আস্বাদন শুরু হয়েছিল। অনুবাদ গল্পের পাশাপাশি আমাদের মাতৃভাষাতেও প্রচুর গল্প লেখেন বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন লেখক। তবে, সেই গল্প যদি ছবিতে হয়, তাহলে কেমন হয়? প্রশ্ন উঠতে পারে যে, বাংলায় সায়েন্স ফিকশনের ওপর প্রথম পূর্ণাঙ্গ সিরিয়াস /রিয়েলিস্টিক কমিক্স কোনটি? অবশ্যই তাহলে ময়ূখ চৌধুরী (প্রকৃত নাম শক্তিপ্রসাদ রায়চৌধুরী)-র ‘আগন্তুক’-এর নাম উঠবেই। ১৯৭০ সালের মে মাসে একটি জনপ্রিয় পত্রিকায় আবির্ভাব হয়েছিল এই ধারাবাহিক কমিক্সটির, চলেছিল ১৯৭০ জ্যৈষ্ঠ থেকে ১৯৭২ পৌষ অবধি। এবার ‘বুক ফার্ম’ প্রায় ৫৫ বছর আগের পত্রিকার পাতায় হারিয়ে যাওয়া সেই মূল সাদা-কালো রূপে প্রকাশিত কমিক্সটি আপনাদের কাছে নিয়ে এল ‘একক বই’ হিসেবে। প্রথম প্রকাশিত কমিক্সটি সম্পূর্ণ সাদা-কালো রূপেই ছিল। ‘বুক ফার্ম’ প্রকাশিত এই বইতে মূল সাদা-কালো কমিকসটি অবিকৃতভাবে ও মজবুত দামি কাগজে ঝকঝকে রূপে ছেপে হাজির করা হল। অন্য কোনো প্রমাণ না পাওয়া অবধি এটিই ‘বাংলার প্রথম সিরিয়াস সায়েন্স ফিকশন কমিকস’ হিসেবে বিবেচিত হবে। শিল্পী ময়ূখ চৌধুরী এই বৃহৎ কমিক্সটির গল্প, চিত্রনাট্য ও অলংকরণ নিজেই করেছিলেন। কমিক্সের মুখ্য চরিত্র জয়ন্ত ও উপেনরূপী ঊরা, যে কিনা সুদূর মঙ্গল গ্রহ থেকে পৃথিবীতে এসেছিল এক বাঙালি বৈজ্ঞানিকের আবিষ্কৃত অদৃশ্য হয়ে যাবার রাসায়নিকের ফর্মূলা চুরি করে নিয়ে যেতে। কমিক্সের শুরু হয় শীতের সন্ধ্যায় একটি বক্সিং ক্লাব থেকে। এই প্রসঙ্গে বলা যায় যে, শিল্পী নিজে যৌবনে নিয়মিত বক্সিং চর্চা করতেন এবং সেইসময়ের রাজনৈতিকভাবে উত্তাল কলকাতার বিপদসংকুল আবহে আত্মরক্ষার্থে সঙ্গে ছোটো হাতুড়ি নিয়ে ঘোরা, রাস্তায় গুন্ডাদমনে মারামারি-- এইসবে অভ্যস্ত ছিলেন। সেইসময় কলকাতার রাস্তায় গুন্ডামি, রাহাজানি ছিল নিত্য ঘটনা। সেইসব ঘটনার কিছুটা প্রতিফলন হয়েছে এই কমিক্সের মাধ্যমে। বক্সিং ও সায়েন্স ফিকশনের মেলবন্ধন দেখা যায় এই কমিক্সে। আরও বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য তুলে ধরার চেষ্টা করছি। ‘জিন রডেনবেরি’ নির্মিত টেলিভিশন সিরিজ ‘স্টার ট্রেক’ ১৯৬৬ থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত বিদেশের টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হয়েছিল। পরে ১৯৬৭ সালে গোল্ডকি (Gold Key) কমিক্স প্রথম এই সিরিজের কমিক্সকরণ করে।(‘গ্রাফিক নভেল’ শব্দটি তখনও বাজারে আমদানি হয়নি।) টেলিভিশন সিরিজ ও কমিক্স সিরিজে একটি চরিত্র বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল, তার নাম ‘ক্যাপ্টেন স্পক’। অনেকেরই মনে আছে ওই চরিত্রের কথা, মনে থাকার অবশ্য যথেষ্ট কারণও আছে। ‘ক্যাপ্টেন স্পক’-এর ছুঁচালো ডগাওয়ালা কান, এই কানের জন্যই স্পক এখনও স্মৃতির পাতায় অমলিন। মঙ্গলগ্রহ থেকে আগত ‘ঊরা’ এবং তার সহযোগীদের কানের সঙ্গে স্পকের কানের এক অদ্ভুত সাদৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়। প্রসঙ্গত, শিল্পী ময়ূখ চৌধুরীর করা কমিক্স ‘আগন্তুক’ প্রকাশের সময়কাল এই টিভি সিরিজ ও গোল্ডকি কমিক্স সিরিজের বেশ কিছুকাল পরে। হয়তো শিল্পী ওই সিরিজগুলো থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন, আবার এই মিল কাকতালীয়ও হতে পারে। যদিও ছুঁচালো কানের এই মিল আরও অনেক কমিক চরিত্রের মধ্যেও দেখা গেছে। তবে, আরও একটি অদ্ভুত মিলের কথাও উল্লেখ করা যেতে পারে। ২০০৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বিখ্যাত হলিউড সিনেমা ‘অবতার’-এর কথা নিশ্চয়ই সবার মনে আছে। জেমস ক্যামেরনের পরিচালনায় এই ছবি। ৮০ পৃষ্ঠার একটি গল্প যেটি কিনা পরে চলচ্চিত্র রূপে আমরা দেখতে পাই। এই সিনেমায় ‘স্যাম ওয়াথিংটন’ ও ‘জো সানডানা’ প্রধান চরিত্রে হাজির হয়েছেন। সেখানে ‘প্যান্ডোরা’ গ্রহের অধিবাসীদের কানের আকৃতি অবিকল ‘ঊরা ও মন্থাপ’ বা তাদের দলের লোকেদের ছুঁচালো ডগাওয়ালা কানের মতো। বলা বাহুল্য, শিল্পী ময়ূখ চৌধুরীর মৃত্যুর বহু পরে এই সিনেমা নির্মিত হয়েছিল। প্রশ্ন উঠতে পারে-- তবে কি পৃথিবীর মানুষের কল্পনায় ভিনগ্রহের মানুষের কান প্রায় একইরকম? সেই সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এই নিয়ে বিস্তারিত গবেষণার অবকাশ রয়েছে। এই ক্ষুদ্র পরিসরে আজ এটুকুই থাক। শিল্পীর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘আগন্তুক’ কমিক্সটিকে কোনোরকম ‘ডিজিটাল কালার’-এ রঙিন না করে, তার মূল সাদা-কালো রূপে প্রথমবার একক বই আকারে ফিরিয়ে এনে শিল্পীর প্রতি আরেকবার ‘বুক ফার্ম’ তার শ্রদ্ধার্ঘ্য প্রকাশ করল। আশা করি, অন্যান্য বইয়ের মতো পাঠকেরা এই বইটিও সমানভাবে গ্রহণ করবেন। ইন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
Title :আগন্তুক || ময়ূখ চৌধুরী
Author :ময়ূখ চৌধুরী
Publisher :Bookfarm || বুকফার্ম
Language : Bangla
Condition : New
Book Printed Origin : india
Readling Level : Teen and Young adult




